রংপুরে লাল পতাকা মিছিল
মোছাঃ শিল্পী আক্তার, রংপুর জেলা প্রতিনিধি
-
আপডেট সময় :
মঙ্গলবার, ৭ নভেম্বর, ২০২৩
-
১২২
বার পঠিত
রংপুরে লাল পতাকা মিছিল।
শিল্পী আক্তার, রংপুর জেলা প্রতিনিধি
রংপুরে মহান রুশ বিপ্লব বার্ষিকী ও বাসদ (মার্কসবাদী)’র ৪৩ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে লাল পতাকা মিছিল ও জনসভা অনুষ্ঠিত। গতকাল ৭ নভেম্বর, মঙ্গলবার সকাল ১১টায় রুশ বিপ্লব বার্ষিকী ও বাসদ (মার্কসবাদী)’র ৪৩ তম প্রতিষ্ঠবার্ষিকী উপলক্ষে লাল পতাকা মিছিল ও রংপুর পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। বাসদ (মার্কসবাদী) রংপুর জেলা শাখার উদ্যোগে আয়োজিত উক্ত জনসভায় সভাপতিত্ব করেন পার্টির জেলা আহŸায়ক কমরেড আনোয়ার হোসেন বাবলু। বক্তব্য রাখেন বাসদ (মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় নির্বাহী ফোরামের সদস্য কমরেড আহসানুল আরেফিন তিতু, পার্টির নীলফামারী জেলার সংগঠক রফিকুল ইসলাম, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি রংপুর জেলার সদস্য মেহেদী হাসান, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট রংপুর জেলার আহŸায়ক সাজু বাসফোর, বাংলাদেশ শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশন রংপুর জেলার আহŸায়ক সুরেশ বাসফোর প্রমূখ। নেতৃবৃন্দ বলেন আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকারের দুঃশাসন, সীমাহীন দুর্নীতি-লুটপাট ও নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধিতে মানুষ অসহনীয় কষ্টে দিন যাপন করছে। নেতারা বলেন, মত প্রকাশের স্বাধীনতা হরণ, সভা সমাবেশে বিনা উসকানিতে পুলিশের হামলা, গ্রেফতার, গুম, খুনের মাধ্যমে দেশে চূড়ান্ত ভীতির পরিবেশ তৈরি করেছে এই অগণতান্ত্রিক সরকার। এই সুযোগে উন্নয়নের নামে মেগা প্রজেক্ট গ্রহণ করে মেগা লুটপাটের সুযোগ করে দিচ্ছে সরকার। লুটপাটের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে আরও একটা প্রহসনের নির্বাচন করে ক্ষমতায় আসতে চায় সরকার। এদের হাত থেকে বাঁচতে বামপন্থীদের নেতৃত্বে ব্যাপক গণআন্দোলন গড়ে তুলে নির্দলীয় তদারকি সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে বাধ্য করে মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে আনতে হবে। আন্তর্জাতিক পরিসরে সাম্রাজ্যবাদীদের যুদ্ধ চক্রান্তের ফলে ফিলিস্তিন, উইক্রেন, ইয়েমেন, সুদানসহ বিশ্বের দেশে দেশে লক্ষ লক্ষ নিরীহ মানুষ, নারী-শিশু প্রাণ হারাচ্ছে। এই যুদ্ধই আজকের দিনে পুঁজিবাদ সাম্রাজ্যেবাদের বেঁচে থাকার অবলম্বন । মানুষের বাঁচার প্রয়োজনীয় উপকরণ নয়, অর্থনীতিকে চাঙ্গা রাখতে যুদ্ধাস্ত্র তৈরী এবং সেই অস্ত্র বিক্রি করে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার মুনাফা করছে সাম্রাজ্যবাদী দেশগুলো। এভাবে শ্রমজীবি মানুষের রক্ত এবং লাশের উপর দাঁড়িয়ে আছে পুঁজিবাদী সাম্রাজ্যবাদী ব্যবস্থা । নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, ১০৬ বছর আগে পৃথীবীর বুকে সর্বহারা শ্রেণী মার্কসবাদ- লেনিনবাদের শিক্ষায় বিপ্লবের মাধ্যমে যে নতুন সমাজ প্রতিষ্ঠা করেছিল তার তুলনা নেই। ১৯১৭ সালের ৭ নভেম্বর বিপ্লবের তাৎপর্য কেবলমাত্র রাশিয়ার মাটিতে সীমাবদ্ধ ছিলো না, দুনিয়ার দেশে দেশে শ্রমজীবি মানুষের কাছে এনেছিলো মানবমুক্তির এক নতুন বার্তা। পৃথিবীর সকল ধর্মের মহামানবগণ তাদের চিন্তায় ও ধারণায় যে সমাজের কল্পনা করেছিলেন নভেম্বর বিপ্লব তার মূর্তরূপ। তারা বলেছিলেন মানবের মুক্তি কেবল স্বর্গে-বেহেস্তে, এই দুনিয়ার নয়। সভ্যতার শ্রেষ্ঠ মনীষা দার্শনিক কার্ল মার্কস দেখালেন কল্পনার সেই স্বর্গ-বেহেস্ত, যা মাটির পৃথিবীতেই করা সম্ভব। মহান লেনিনের নেতৃত্বে নভেম্বর বিপ্লবের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয় এমন এক সমাজ যেখানে দারিদ্র্য ও ক্ষুধা নেই, নেই বেকারত্ব ও অশিক্ষা, নেই ভিক্ষা ও পতিতাবৃত্তি। শিক্ষা ছিলো বিনামূল্যে, চাকুরি ছিলো নিশ্চিত। বেঁচে থাকার কোন উপকরণের অভাব ছিলো না। নারী-পুরুষের সমান অধিকার সকল ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত। শিশুদের দিয়েছিলো অবাধ বিকাশের অধিকার। বিশ্বের বড় বড় মনীষীগণ দু’হাত তুলে অভিনন্দন জানিয়েছিলেন এই সমাজ ব্যবস্থাকে। সাম্রাজ্যবাদীদের যুদ্ধ চক্রান্তের বিপরীতে মানুষের শেষ আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছিলো এই সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থা। এর নেতৃত্বে গড়ে উঠেছিলো যুদ্ধবিরোধী শান্তি শিবির। এককভাবে যুদ্ধ বাঁধানোর ক্ষমতা আর সাম্রাজ্যবাদীদের ছিলো না। সোভিয়েত সমাজতন্ত্রের এই অভ‚তপূর্ব সাফল্য ও অগ্রগতির পরও তার পতন ঘটে। কিন্ত তা স্বত্বেও এর শিক্ষা ম্লান হয়নি, তার উপলব্ধি আরও দৃঢ় হয়েছে। মার্কসবাদ লেনিনবাদের সেই দৃঢ় ও উন্নত উপলব্ধি কমরেড শিবদাস ঘোষের চিন্তাধারাকে প্রয়োগ করে বাংলাদেশের মাটিতে শোষণহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে নিয়োজিত তাদের মহান পার্টি বাসদ (মার্কসবাদী)’র এই সংগ্রামকে এগিয়ে নিতে দেশের সকল শ্রমজীবী মেহনতী মানুষ ও গণতন্ত্রমনা মানুষকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
Please Share This Post in Your Social Media
এই জাতীয় আরও খবর